‘মা তোর তো অনেক সমস্যা, কাছে আয়’ অত:পর…

মা তোর তো অনেক- ‘মা তোর তো অনেক সমস্যা। কাছে আয়। আজমীর শরিফ ও হযরত শাহজালাল (রহ.)’র মাজারের পবিত্র মাটি রয়েছে আমাদের কাছে। একটুখানি নে । তোর সব সমস্যা কেটে যাবে। আয় উন্নতিও হবে বেশ।’

এভাবে প্রতারনার মুখে ফেলে ষাটোর্ধ নারী ফাতেমা খাতুনের পরনের অলংকার লুটে নিয়েছে প্রতারকরা। আর তাদের ধরতে গিয়ে প্রতারকদের আঘাতে শেষ পর্যন্ত প্রাণও হারিয়েছেন ফাতেমা খাতুন। নিহত ফাতেমা খাতুন সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়া গ্রামের আজিবর রহমানের স্ত্রী।

গ্রামবাসী প্রতারক আশাশুনির শ্রীকলস গ্রামের শহিদুল্লাহর ছেলে সাইদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী আমেনা খাতুনকে হাতেনাতে আটক করে গনপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) বিকালে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ পারুলিয়ার ফাতেমা খাতুনদের বাড়িতে আসেন অজ্ঞাত পরিচয় এক নারী ও তার স্বামী। তারা ফাতেমা খাতুনকে মা বলে সম্বোধন করে ফাতেমা খাতুনকে বলেন, মা তুমিতো অনেক মসিবতের মধ্যে রয়েছো। হযরত শাহজালালের মাজারের মাটি নিলে সব মসিবত দূর হয়ে যাবে। বৃদ্ধা ফাতেমা খাতুন তাদের কথায় বিশ্বাস করার সাথে সাথে তারা ফতেমা খাতুনকে বলেন, ১৪১ পা হেঁটে তোর বাড়ির আশপাশের কবর থেকে মাটি নিয়ে আয়। এ সময় তারা বলেন তোর হাতে কানে থাকা গয়না রেখে যা। ফাতেমা খাতুন তাদের কথা মতো কানের দুল ও হাতের একটি আংটিসহ পরনের অলংকার রেখে গুনে গুনে পায়ে হাঁটতে থাকেন। কিছুক্ষন পর পেছনে ফিরে দেখেন তারা নেই। এ সময় ফাতেমা খাতুন চিৎকার দিয়ে তাদের পিছু ধাওয়া করতে একটি ভাড়ার মোটর সাইকেলে ওঠেন। পিছু ধাওয়া করতে গিয়ে আশাশুনির হাজিপুর গ্রামে পৌঁছাতেই মোটর সাইকেলে চলমান অবস্থায় প্রতারক চক্রটি তার পেটে সজোরে লাথি মেরে ফেলে দেয়।

স্থানীয়রা তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তার তাকে খুলনায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠান। পথিমধ্যে মারা যান ফাতেমা খাতুন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারি পুলিশ সুপার (কালিগঞ্জ সার্কেল) ইয়াসিন আলি বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আশাশুনি থানায় মামলা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।